রোজা ভঙ্গের কারণ সূমহ



পবিত্র রমজান, এই মাসে সকল সুস্থ সাবালক মুসলিমের উপর মহান আল্লাহ্‌ তা’আলা সাওম বা রোজ ফরজ করেছেন। এই লেখায় রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ তুলে ধরা হল।


**ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে ও ধূমপান করলে


যদি কেউ ভুলক্রমে পানাহার করে তবে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে নেয়, কেননা, আল্লাহ তায়ালাই তাকে এ পানাহার করিয়েছেন।” (অর্থাৎ এতে তার রোযা ভাঙ্গেনি)। (বুখারী শরীফ – ১৯৩৩ ও মুসলিম শরীফ – ১১৫৫)


**স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে

অর্থাৎ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত সহবাস করা যাবেনা। তবে তার মানে এই না যে আপনি আপনার স্ত্রীকে আদর-যত্ন করতে পারবেন না। তাকে ছুতে পারবেন, তবে রোজা অবস্থায় কামভাবে না ছোয়াটাই ভালো। তাছাড়া অন্যান্য স্বাভাবিক বিষয়াদিতে কোন সমস্যা নেই।

**ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে

ইচ্ছাকৃত ভাবে বমি করাটা খাচরামি ছাড়া আর কিছু হতে পারে বলে আমার মনে হয়না। রোজা রাখলে এমনটি কখনোই করা যাবেনা। এতে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়ে থাকে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। অনিচ্ছাকৃত বমি হলে, বমি করার পর সমস্ত মুখ ভালো করে পানি দিয়ে কুলি করে ধুয়ে নিতে হবে যেন মুখের কোথাও বিন্দুমাত্র খাবারের কণা জমে না থাকে। নবী  (সা) বলেন –

যে ব্যক্তি অনিচ্ছা বমি করল তাকে উক্ত সিয়াম কাযা করতে হবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করল তাকে উক্ত সিয়াম অবশ্যই কাযা করতে হবে (আবূ দাউদ – ২৩৮০)

**ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটালে

হস্তমৈথুন বা অন্য কোনভাবে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে বীর্যপাত ঘটায় তাহলে তা রোজা ভঙ্গের কারণ হবে। এক্ষেত্রে যদি কেউ কামভাবে স্ত্রীকে স্পর্শ করার মাধ্যমেও বীর্যপাত ঘটায় তাহলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাংবেনা। তবে স্বপ্নদোষ হয়েছে এমনটা বোঝামাত্রই ফরয গোসল করে নিজেকে পবিত্র করে নিতে হবে।

**রোজা অবস্থায় কাউকে জোর করে কিছু খাওয়ালে রোজা ভেঙে যায়।
ভুল করে কিছু পানাহার করলে রোজা ভাঙ্গবেনা। কিন্তু জোর করে যদি কেউ কিছু খাইয়ে দেয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। 

**কোন অখাদ্য খেলে-
যেসব জিনিস খাদ্য, পানীয় বা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় না_ এমন কিছু খেলে ।

**ইচ্ছাকৃত কোনো কিছুর ধোঁয়া নাকের ভেতর নিলে।

** দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকণা যদি একটি ছোলা-বুটের পরিমাণ হয় তা খেলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। তবে ছোলার চেয়ে ছোট হলে রোজা নষ্ট হবে না বরং মাকরুহ হবে। 

**দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে থুথুর সঙ্গে মিশে গলার ভেতরে চলে গেলে।
 

** নাক বা কানে ওষুধ দিলে তা যদি পেট পর্যন্ত পেঁৗছে যায়
তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।


** নিজ স্ত্রী অথবা অন্য কাউকে কামভাবের সঙ্গে স্পর্শ করার ফলে যদি বীর্যপাত হয় তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। আর এতে বীর্যপাত না হলে রোজা নষ্ট হবে না।

** গোসল বা অজু করার সময় রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় হঠাৎ গলার ভেতরে পানি চলে গেলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
 

** পানি অথবা তেলে ভেজা আঙুল গুহ্যদ্বারে ঢোকালে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। 

**মহিলাদের ঋতুস্রাব হলে

মহিলাদের ঋতুস্রাব হলে কিংবা বাচ্চা প্রসবোত্তর সময়ে স্রাব হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে

ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে কিছু প্রবেশ  করালে

যদি ইনজেকশনের মাধ্যমে জীবনী শক্তি বৃদ্ধি করার জন্যে কিংবা অন্য কোন কারণে শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। যদি অবস্থা এমন হয় যে ইনজেকশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধ নিতেই হবে নয়তো বড়সড় কোন সমস্যা হয়ে যাবে সেক্ষেত্রে কথা ভিন্ন। এ ব্যাপারে একাধিক মতামত রয়েছে। ইনজেকশন যদি এমন হয় যে তাহলে শরীরের বল বৃদ্ধি করবে (যেমন গ্লুকোজ) তাহলে সে জাতীয় ইনজেকশন ব্যবহারে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ খাবার যেই কাজ করে এক্ষেত্রে অনেকটা একই কাজ করছে এটি। তবে শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্যে যদি ইনিজেকশন দেয়া হয় (যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন) তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না।


শুধু মাত্র ইসলাম প্রচারের লক্ষ্যে এই পোষ্টের কোন প্রকার পরিবর্তন না করে কপি করতে পারেন ।

“ গুরুত্বপূর্ণ এই পোষ্টটি শেয়ার করলে হয়তো অনেকই জানতে ও আমল করার সুযোগ পাবে। ভাই ও বোনেরা দয়া করে পোষ্টটা শেয়ার করুন ”

Comments