দেনমোহরের পরিমাণ লিখতে হয় তাই লেখা। হাতেগোনা কয়েকজন বাদে বিয়েবিচ্ছেদজনিত কারণ ছাড়া স্ত্রীকে খুশি মনে দেনমোহর প্রদান করেছেন এমন নজির খুঁজে পাওয়া মুশকিল। দেনমোহর আদায়ের প্রচলন সমাজে বেশি বেশি হলে সমাজ থেকে যৌতুক প্রথা উঠে যেতে বাধ্য। ইসলামের বিধান সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নই। আমরা দেনমোহরকে নারীর বৈবাহিক জীবনের একটি বন্ড মনে করে থাকি, স্ত্রীর নিরাপত্তার গ্যারান্টি। অথচ এ ধারণা একেবারেই অমূলক। বিয়েতে দেনমোহর প্রদান প্রসঙ্গে কোরানের সুরা নিসার ৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন-তোমরা স্ত্রীদের মোহর স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে প্রদান করবে।
অতএব আল্লাহর নির্দেশেই স্ত্রীকে মোহর দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিয়ের সময়ই স্ত্রীকে মোহর পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। স্বামী তার আর্থিক সঙ্গতি অনুযায়ী মোহর দেবে। স্ত্রী মোহর হিসেবে প্রাপ্ত সম্পত্তির মালিক হয়েই স্বামীর সঙ্গে সংসারযাত্রা শুরু করবে। স্বামী কর্তৃক প্রাপ্ত এই সম্পদ একান্তভাবে স্ত্রীর। এখানে অন্য কারো কোনো অধিকার নেই। স্ত্রী ইচ্ছে করলে প্রাপ্ত মোহর থেকে স্বামীকে কিছু অংশ দিতে পারে বা অন্য কাউকে কিছু দান করতে পারে, এটা স্ত্রীর ব্যক্তিগত অধিকার এবং স্বাধীন ইচ্ছা। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে দেনমোহর আদায়ের প্রথা দিন দিন বিলুপ্ত হতে চলেছে। কোনো অনিবার্য কারণে স্বামী তার জীবদ্দশায় স্ত্রীর মোহর পরিশোধ না করে ইন্তেকাল করলে স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে কবরস্থ করার প্রয়োজনীয় খরচাদি নির্বাহ করার পর স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে স্ত্রীর প্রাপ্য অপরিশোধিত মোহর স্ত্রীকে দিতে হবে। কারণ, স্ত্রীর প্রাপ্য মোহর স্বামীর নামে ঋণ হয়ে রয়েছে। এই হলো দেনমোহর সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি।
Comments
Post a Comment