অনেকেই নিজের উচ্চতা নিয়ে
বেশ হীনমন্যতায় ভুগে থাকেন। বিশেষ করে যখন তার পাশে এসে দাঁড়ান ভালো
উচ্চতার সুগঠিত দেহের কোনো মানুষ। আপনমনেই বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস। অনেকের
ধারণা উচ্চতা বংশগত একটি ব্যাপার অর্থাৎ উচ্চতা কম বেশি হওয়ার পেছনে রয়েছে
শুধুমাত্র জেনেটিক কিছু ব্যাপার। কিন্তু কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। গবেষকগণ
বলেন মানুষের দেহের উচ্চতা কোন বেশি হওয়ার পেছনে জেনেটিক্যাল কিছু ব্যাপার
বাদেও কাজ করে আরও নানা বিষয়। গবেষণায় দেখা যায় উচ্চতার উপর প্রায় ২০%
প্রভাব থাকে আমাদের পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ।
সুতরাং এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা বাড়াতে পারি আমাদের দেহের
উচ্চতা। চলুন তাহলে আজকে জেনে নেয়া যাক দেহের উচ্চতা বাড়াতে কী কী কাজ করা
উচিত।
১) পরিমিত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম
১) পরিমিত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম
আমরা সকলেই জানি ঘুমের সময় আমাদের দেহ
গঠনের টিস্যুগুলো কাজ করে। এরফলে আমাদের উচ্চতা ও শারীরিক গঠন বৃদ্ধি পায়।
হিউম্যান গ্রোথ হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের দেহে উৎপন্ন হতে থাকে যখন
আমরা পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে পারি এবং বিশ্রাম নিতে পারি। তাই বয়স অনুযায়ী
৮-১১ ঘণ্টা ঘুম ও বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করুন নিজেকে। প্রাকৃতিক উপায়ে এটিই
সবচাইতে ভালো পদ্ধতি উচ্চতা বৃদ্ধি করার।
২) নিয়মিত ব্যায়াম এবং খেলাধুলা
ছোটবেলা থেকেই যারা অনেক বেশি খেলাধুলা
করে থাকে এবং সুঠাম দেহের অধিকারী হয় তাদের উচ্চতা অন্যান্যদের তুলনায় একটু
বেশি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এছাড়াও সাতার, আরোবিক্স, টেনিস, ক্রিকেট,
ফুটবল, বাস্কেটবলের মতো খেলার মাধ্যমে ও হাঙ্গিং, স্ট্রেচিং ধরণের ব্যায়াম
দেহের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ সহায়ক। কারণ যারা অনেক বেশি খেলাধুলা এবং
ব্যায়াম করেন ও যারা সুঠাম দেহের অধিকারী তারা স্বভাবতই একটু বেশি এবং
পুষ্টিকর খাবার খান। এতে করে দুটো ব্যাপারই কাজ করে উচ্চতা বৃদ্ধিতে।
৩) যোগব্যায়াম
৩) যোগব্যায়াম
যোগব্যায়ামের অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ
ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে। যোগব্যায়াম আমাদের দেহে ঘুমের সময় যে গ্রোথ
হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় তা উৎপন্ন করে এবং আমাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ট্রাইঅ্যাঙ্গেল পোজ, কোবরা পোজ, মাউন্টেইন পোজ, প্লিজেন্ট পোজ, ট্রি পোজ
ইত্যাদি ধরণের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সহায়ক।
৪) দেহের সঠিক অঙ্গবিন্যাস
হাঁটাচলা করা এবং বসার সময় সঠিকভাবে ঘাড় ও
মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটা ও বসা এবং শোয়ার সময় ঘাড় বেশি বাঁকা না করে
মেরুদণ্ডের প্রায় সমান্তরালে রাখার মতো অঙ্গবিন্যাসও উচ্চতা বৃদ্ধিতে
সহায়তা করে থাকে।
৫) সুষম খাদ্যাভ্যাস
উচ্চতা বৃদ্ধিতে সব চাইতে সহায়ক হচ্ছে
সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস। পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দেহের হাড় ও
কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি আমাদের দেহে গ্রোথ হরমোন উৎপন্ন
করে, ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন এবং হাড় মজবুত করে, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং
কার্বোহাইড্রেট কোষ গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও খাবার হজম এবং পুরো
দেহে পুষ্টি পৌঁছানোর ব্যাপারটিও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই সুষম খাবার
নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন।
৬) উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন
জাংক ফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কার্বোনেটেড
ড্রিংকস, অতিরিক্ত চিনি ইত্যাদি ধরণের খাবার, ধূমপান ও মদ্যপান করার
অভ্যাস, রাতে না ঘুমানো ইত্যাদি আমাদের দেহে গ্রোথ হরমোন তৈরিতে বাঁধা
প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস যদি বাবা-মায়ের
থেকে থাকে তবে তার প্রভাব সন্তানের উপরেও পড়ে। তাই এইসকল কাজ থেকে বিরত
থাকুন।
Comments
Post a Comment