২০১৪ সালের শেষ নাগাদ গোটা দুনিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ট্যাবলেট ছড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্মার্টফোনের চেয়ে বেশ বড় আকারের এই প্রযুক্তি পণ্যটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
কিন্তু সেই সঙ্গে এর নির্মাতারাও বেশ চিন্তিত একটি বিষয় নিয়ে। তা হলো, এর চাহিদা ক্রমেই ফুরিয়ে যাবে। গত তিন বছরে এর চাহিদা বাড়লেও এখন তা কমতে শুরু করেছে। যে পাঁচটি কারণে মানুষ আর ট্যাব কিনবে না, তা জেনে নিন।
১. কেই জানেন না ট্যাবের কাজটি কী? :
ট্যাব কী অবসরের সঙ্গী? নাকি পারসোনাল অ্যাসিস্টে
ন্ট? নাকি ওয়ার্কস্টেশন? কেউ জানেন না ট্যাবের জন্ম হয়েছে কী কারণে। এটা স্রেফ ক্রেজ। মাইক্রোসফট সারফেস ৩ ল্যাপটপকে সরিয়ে দিয়েছে। আইপ্যাড জলবায়ুবিদদ ও মেরিন বায়োলজিস্টদের জন্য। স্যামসাং গ্যালাক্সি প্রো ব্যবসায়ীদের জন্য।
কিন্তু ট্যাব কী কাজের জন্য? তবে স্রেফ পিন্টারেস্ট বা অন্যান্য সোশাল সাইটে ব্রাউজের জন্য ভালো লাগতে পারে ট্যাব। কিন্তু এখনো নির্মাতারা এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থির করতে পারেননি।
২. ট্যাবলেট নয়, ফ্যাবলেট :
২০১০ সালের আইপ্যাড বের হয় যা ফোনের চেয়ে কিছুটা বড় এবং ল্যাপটপের চেয়ে অনেক ছোট আকারের। এটা বই পড়া এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য দারুণ মাপের।
২০১৪ সালে যা স্মার্টফোন বাজারে এসেছে তা দারুণ গতির এবং এদের পর্দাও বেশ বড়। তাহলে, ৭, ৮ বা ১০ ইঞ্চির পর্দার কী দরকার? স্মার্টফোনের চেয়ে যতটুকু বড় যন্ত্র প্রয়োজন তার জন্য ফ্যাবলেটই যথেষ্ট।
৩. পুরনো মডেলই যথেষ্ট ভালো :
ট্যাব যারা কিনেছেন তাদের জন্য নতুন নতুন মডেলের ট্যাবে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি? তিন বছর আগেও ফোনই যথেষ্ট ছিল।
এর পর থেকে স্মার্টফোনের নতুন নতুন সংস্করণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মেনে নিয়েছেন ক্রেতারা। কিন্তু ট্যাবের নতুন সংস্করণে এমন কি আসছে যা ফোনে নেই? আবার ফোন যে হারে এগিয়ে যাচ্ছে তার চেয়ে মোটেও এগিয়ে যাচ্ছে না ট্যাব।
কাজেই শখের বশে একটি ট্যাব যারা কিনেছে তাদের কাছে এর নতুন সংস্করণ নেওয়া কোনো অর্থ হয় না। তা ছাড়া ফোনেই যে কাজ চলে, সে সব কাজের দিক থেকে ট্যাবের নানা অসুবিধা রয়েছে।
ফোনের ব্যাটারি বছরে শতাধিক চার্জ সাইকেল পূরণ করতে পারে। কিন্তু ট্যাবের ক্ষেত্রে তা ডজন খানেকের বেশি নয়। ট্যাবে সিনেমা বা অন্য কিছু করতে মাঝে-মধ্যে ভালো লাগে, সব সময় নয়। এ ক্ষেত্রে টেলিভিশন বা ডেস্কটপ রয়েছে। কাজেই ট্যাব কি নিত্যসঙ্গী হতে পারছে?
৪. অ্যাপগুলো খুব ভালো নয় :
স্মার্টফোনে যে অ্যাপ রয়েছে সেগুলোই ট্যাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তা ছাড়া ট্যাবের বিশেষত্ব অনুযায়ী এর অ্যাপের কোনো বিশেষত্ব নেই। অনেক ক্ষেত্রে বরং স্মার্টফোনের অ্যাপ পাওয়া যায় না ট্যাবে।
গবেষকরা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, মোবাইলের মতো প্রচুর পরিমাণে ট্যাব বিক্রি করা সম্ভব নয়। একে বিক্রির একমাত্র উপায় খুব কম দামে বাজারে ছাড়া। অথবা ট্যাবকে আলাদা মানের ও বৈশিষ্ট্যের অ্যাপ দিয়ে পূর্ণ করে দেওয়া।
৫. অ্যাপলের প্রতিযোগীর অভাব :
যত সময় গড়াচ্ছে, স্মার্টফোনের নির্মাতারা প্রতিযোগিতা করছেন। ট্যাবের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নামার ইচ্ছা কারো মধ্যে দেখা যায় না।
বিশেষ করে অ্যাপলের আইপ্যাডের প্রতিযোগি হয়ে উঠতে পারে এমন কোনো নির্মাতা দাঁড়াতে আগ্রহী নন। কিন্তু তারা মোবাইলের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ নিয়ে চলেছেন। কাজেই এর ভবিষ্যত নেই বললেই চলে।
ব্র্যান্ডের অন্য যারা ট্যাব তৈরি করছেন তারাও অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। আইপ্যাড যেখানে রাজার আসন ধরে রেখেছে, সেখানে তার আশপাশে কাউকে দেখা যায় না। আর প্রতিযোগিতার অভাবে অ্যাপলও তাদের আইপ্যাডকে এত বেশি আপডেট করে না যা ফোনের ক্ষেত্রে করা হচ্ছে।
Comments
Post a Comment